সম্প্রতি ছয় ধাপে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনকে ‘ভৌতিক’ আখ্যা দিয়েছে বেসরকারি সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন।
সংস্থাটি বলছে, দেড়শ বছরের ইতিহাসে এবারই সবচেয়ে খারাপ ইউপি নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনে ভয়ে জীবিতরা ভোট দিতে না পারলেও মৃত ভোটাররা ঠিকই তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ২০১৬: একটি সার্বিক মূল্যায়ন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন করে সুজন। এতে বলা হয়, সদ্য অনুষ্ঠিত নবম ইউপি নির্বাচনে ১৪৫ জন নিহত এবং সাড়ে ১১ হাজার জন আহত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, “পাকিস্তান আমলে নির্বাচনে পর আইয়ুব খান সেটিকে মৌলিক গণতন্ত্র বলে উল্লেখ করেছিলেন। আর এই সরকার যে নির্বাচন দিচ্ছে, আমি এই নির্বাচনকে বলবো- ভৌতিক নির্বাচন।”
নিজের এই বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, “এবারের নির্বাচন ভয়ের কারণে জীবিত ভোটাররা ভোট দিতে পারেননি। কিন্তু মৃত ভোটাররা ভোট দিয়েছেন।”
আবুল মকসুদ দাবি করেন, “দেড়শ বছরের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে খারাপ ইউপি নির্বাচন হয়েছে। দেশি-বিদেশি কোনো স্থানীয় নির্বাচনের সঙ্গে এই নির্বাচনের কোনো মিল নেই।” তিনি আরো বলেন, “এবারের ইউপি নির্বাচন ক্ষমতাসীন দল লাভবান হয়েছে। তবে ভেঙে পড়েছে নির্বাচনী ব্যবস্থা।”
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সুজন সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, “এবারের ইউপি নির্বাচনের কারণে প্রকাশ্যে সহিংসতা ও অনিয়মের একটি রীতি চালু হয়ে গেছে। ভবিষ্যতে তার লাগাম টেনে ধরা খুবই কঠিন হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ‘নির্বাচন ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ছে’ জানিয়ে এ ভাঙন রোধে জাতীয় সংলাপ আহ্বানের দাবি জানান সুজনের সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার। তিনি বলেন, সরকার, নাগরিক সমাজ ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে এই জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সুজনের নির্বাহী সদস্য মুহাম্মাদ জাহাঙ্গীর, প্রকৌশলী মুসবাহ আলীম প্রমুখ।
পাঠকের মতামত: